ডেভিড ব্লানকেট ১৯৪৭ সালের জুন মাসে শেফিল্ডের, দক্ষিণ ইয়র্কশায়ার এর আর্থার ব্লানকেট এবং তাঁর স্ত্রী ডরিস ব্লানকেটক এর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন । ভুলভাবে বিকশিত অপটিক স্নায়ুর কারণে ডেভিড জন্ম থেকেই ছিলেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি। জন্ম থেকেই দৃষ্টিহীন ডেভিড চার বছর বয়স থেকে অন্ধ শিশুদের জন্য করা একটি বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা শুরু করেন। আধুনিক প্যারেন্টিংয়ের মানদণ্ড অনুসারে, শাসন ব্যবস্থা কোনোভাবেই মৃদু ছিল না। তবে তিনি ভাবেন যে বোর্ডিং স্কুল এর জন্য দুটি সুবিধা নিয়ে আসবেন। তিনি পিয়ানো টিউনার হওয়ার প্রশিক্ষণে একটি কোর্স প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং আরও বিস্তৃত শিক্ষার প্রতি জোর দিয়েছিলেন। তিনি একটি টেকনিক্যাল কলেজে খণ্ডকালীন পড়াশোনা করেছিলেন এবং শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে তিনি রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন সেখানে স্থান অর্জনের জন্য ভবিভিন্ন পরীক্ষায় যথেষ্ট ভাল পারফরম্যান্স দেখিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
ডেভিড ব্লানকেট একজন প্রাক্তন রাজনীতিবিদ। ১৯৭০ সালে শখের বসেই শেফিল্ড সিটি কাউন্সিলে পদ পান যা তাকে শেফিল্ডের সর্বকনিষ্ঠ কাউন্সিলার হিসেবে পরিচিতি দেন। সেই থেকেই শুরু। তিনি শেফিল্ড ব্রাইটসাইড এবং হিলসবারো নির্বাচনী এলাকায় ২৮ বছর প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। পরবর্তীতে হয়েছেন শিক্ষা ও কর্মসংস্থান সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব।
পুরো সময় তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন শিক্ষাকে এবং শিক্ষাক্ষেত্রে এনেছিলেন ইতিবাচক পরিবর্তন। বিভিন্ন স্কুলে ১১ বছর পর্যন্ত শিশুদের জন্য “লিটারেচি আওয়ার” ও “নিউমেরেসি আওয়ার” ব্যবস্থা চালু করেছিলেন যাতে শিশুরা তাদের স্বাভাবিক দক্ষতা গুলো অর্জন করে। বিচ্ছেদ ঘটা পরিবারের সন্তানদেরও প্রতি যেন গাফিলতি না থাকে তারও নির্দেষ দিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রসচিব হিসেবেও তিনি ছিলেন সফল।
ব্লানকেট লিখে গিয়েছেন বেশ কিছু বই। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য “অন আ ক্লিয়ার ডে” এবং আত্মজীবনীমূলক বই “দ্যা ব্লাংকেট ট্যাপস: মাই লাইফ ইন দ্যা বিয়ার পিট”।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর বিষয় ছিল ব্লাঙ্কেটের গাইড কুকুর – রুবি, টেডি, অফা, লুসি, স্যাডি, কসবি এবং বার্লি, যারা হাউস অফ কমন্সে পরিচিত চরিত্র হয়ে উঠেছে। সাধারণত চেম্বারের মেঝেতে ব্লানকেটের পায়ে ঘুমিয়ে থাকে। ব্লানকেটের কাছে তার দুই সহকর্মী সাংসদের পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে এ নিয়ে মন্তব্য গুলো আরও অনুপ্রেরণা জাগিয়ে তোলে তাঁর মধ্যে। আর এই কুকুরগুলোই তাঁকে চলতে -ফিরতে,যাতায়াতে সবরকম পথ নির্দেশনা দিয়ে থাকতো।
দৃষ্টিশক্ত লোকেরা অতীতে ডেভিড ব্লানকেটের অন্ধত্ব নিয়ে অসুবিধা বোধ করে এবং তাই এই বন্ধ চোখের পিছনে লোকটির কম স্পষ্ট, তবে আরও গুরুত্বপূর্ণ গুণাবলীগুলো নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়। তাঁর অন্ধত্বের প্রতি একচেটিয়া দৃষ্টি নিবদ্ধ করে তাঁকে বোঝার একটি সম্ভাব্য বিভ্রান্তিমূলক উপায়, কারণ প্রবৃত্তিটি একে কেবল অক্ষমতা হিসাবে দেখা। অন্ধত্ব প্রকৃতপক্ষে তার জীবন গঠনে একক বৃহত্তম ফ্যাক্টর ছিল – তবে সবসময় সর্বাধিক সুস্পষ্ট, সীমাবদ্ধ উপায়ে নয় এবং এটি একমাত্র ফ্যাক্টর হওয়া থেকে খুব দূরে। কারণ, তিনি একজন বিদ্বান যোদ্ধাও বটে।
লেখক: লামিয়া নাহার
বাংলা ভাষায় এই সর্বপ্রথম যোগাযোগ বৈকল্য আছে এমন মানুষদের সমস্যা, সমাধান, সম্ভাবনা এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ের একমাত্র ব্লগসাইট। আপনিও প্রতিবন্ধকতা কিংবা যোগাযোগ বৈকল্য সম্পর্কিত লেখা পাঠাতে পারেন blog@connectingdisorders.org এই ঠিকানায়। আমাদের অভিজ্ঞ রিভিউ প্যানেলের সম্পাদনা শেষে আপনার লেখা প্রকাশ করা হবে এই ব্লগে।