সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্তদের উপর করোনার নেতিবাচক প্রভাব

করোনা ভাইরাস বা COVID 19 মহামারী এর প্রভাবে, কম বেশি সকল মানুষ বিভিন্নভাবে এবং বিভিন্ন পর্যায়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তবে যাদের স্নায়ুবিক বিকাশজনিত রোগ যেমন: সেরিব্রাল পালসি রয়েছে তাদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হবার মারাত্মক ঝুঁকি রয়েছে । তাদের যে ধরনের  বিশেষ পরিচর্যা পাবার দরকার তা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় অন্যান্য অনেকের চেয়ে সেরিব্রাল পালসিতে আছে এমন মানুষের উপর করোনার আঘাত অধিকতর নির্মম হচ্ছে।

উপযুক্ত সেবার অভাব

সারা দেশের শিশুরা এই বছর বাসায় থেকেই শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।  পরিবেশ ও রুটিনের পরিবর্তন প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বাধাগ্রস্থ করছে। তবে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত অনেক শিশু বিশেষ বিদ্যালয়ের সেবার উপর নির্ভরশীল। অনলাইন কার্যক্রম এখন বিকল্প মাধ্যম হলেও এতে তারা উপযুক্ত সেবা ও শিক্ষণ পাচ্ছে না ফলে তারা পিছিয়ে পড়ছে।

শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয় যারা বিভিন্ন সামাজিক সেবার উপর নির্ভর করত তাদের কষ্ট দ্বিগুন হয়েছে। মৌলিক চাহিদা ব্যতীত অন্যান্য সেবামূলক কাজ বন্ধ থাকায় অনেকে ফিজিওথেরাপি, আচরণগত থেরাপি, চাকুরীর দক্ষতা প্রশিক্ষণের মত জিনিস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।  স্বল্প আয়ের পরিবারগুলতে অভাব বেড়েছে। এছাড়া কমিউনিটি সেন্টার ও ডে কেয়ার সেন্টার বন্ধ রয়েছে। যার ফলে পিতামাতাদের বাহিরে কাজে যাওয়া ও সন্তানের লালন পালনের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হচ্ছে।

 

অসুস্থতা ও মৃত্যু ঝুঁকি বৃদ্ধি

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি ও স্নায়ুবিক বিকাশজনিত রোগ আছে এমন ব্যক্তি COVID 19 দ্বারা সংক্রমিত হলে গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। কিছু দিন আগে মেরিল্যান্ডের সেরিব্রাল প্যালসিতে আক্রান্ত এক যুবতী করোনাতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিনি একজন দোকান কর্মী ছিলেন , তিনি  এই মহামারীর মাঝে কাজ চালিয়ে যাওয়ার উপর জোর দিয়েছিলেন কারণ তিনি লোকদের সহায়তা করতে চেয়েছিলেন

বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, নার্সিং হোম এবং বিশেষ মানুষদের জন্য সৃষ্ট ঘরগুলিতে কোভিড -19-এর সংখ্যা বেশি।  প্রাণহানির ঘটনাও কম নয়।  এছাড়া ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এবং কর্মচারীদের স্বল্প বেতন, অতিরিক্ত কাজ এবং পর্যাপ্ত সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহ না করায় সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।

 

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের ইতিবাচক পরিবর্তন

যদিও সেরিব্রাল পালসি এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা আছে এমন ব্যক্তিদের জন্য মহামারীর বেশিরভাগ সময়  ছিল মারাত্মক, তবে পরে কোন ইতিবাচক পরিবর্তনও আমরা দেখতে পেতে পারি। যেহেতু বহু লোক বাড়িতে বসে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কিভাবে বিশেষ ব্যক্তিরা বাসায় বসে সকল কাজ সম্পন্ন করতে পারে সেদিকে নজর দেয়া হচ্ছে। তারা বছরের পর বছর বাসায় থেকে কাজ করার দক্ষতা অর্জন করতে লড়াই করে যাচ্ছে এখন এই কাজের সম্ভাবনা অনেক গুন বেড়ে গেছে।

এই মহামারি ইনস্টিটিউশনাল লিভিং এর ঝুঁকিগুলো তুলে ধরেছে। নার্সিং হোমগুলোতে  মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই ধরণের যত্ন নেওয়া থেকে তারা দূরে সরে যেতে পারে। এইদিকে প্রতিবন্ধকতা আছে এমন ব্যক্তিরা এইসব জায়গা থেকে সরে নিজ বাসায় উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে বাসায় থাকতে চাইছে । সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য এটি একটি কঠিন সময়। আসুন এই গুরুত্বপূর্ণ সময় আমরা তাদের পাশে থাকি। 

লেখাটি  www.cerebralpalsyguidance.com এ প্রকাশিত এবং সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য অনুবাদকৃত।

মুল লেখক: Mary Ellen Ellis 

Leave a Comment

Skip to content