স্পিচ ব্যানানা এবং বাচন বিকাশ

পৃথিবীতে সবগুলো জীবের মাঝে মানুষ কেন শ্রেষ্ঠ বা মানুষই পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণভাগে? কারণ মানুষ সামাজিক বা একত্রে বসবাস করে, মানুষ সভ্যতা গড়ে তুলতে পেরেছে, মানুষের হাতে নিত্যনতুন প্রযুক্তি এসেছে কিন্তু এসব কথার যদি আমরা মৌলিকার্থক (minimalist) বিশ্লেষণে যাই তবে আমরা একটি উত্তরই পাই যা আমাদের পৃথিবীর অন্যজীবের থেকে বিশেষ করেছে তা হলো আমাদের কথা বলবার ক্ষমতা। একজন মানবশিশুর এই কথা বলার ক্ষমতা অর্জন একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটি কি সহজাত (Chomsky’s language acquisition) নাকি পরিবেশ বা অভ্যাস (B. F.Skinner & Behavioral Psychology) তাও বিচার করা এখনো সম্ভব নয়।

Image source:www.jtc.org/

এই জটিল অথচ প্রায় সব মানুষের কাছে থাকা ক্ষমতা ভাষার ক্ষুদ্রতম বিশ্লেষণে যে মৌলিক উপাদানে ভাগ করা তাকে ধ্বণিমূল (Phoneme) বলে। পৃথিবীতে মুখে উচ্চারণ করা যায় এমন সব ভাষাগুলোর মৌলিক ধ্বনিমূল খুব বেশি নয় এবং সব ভাষাতেই অনেকগুলো সাধারণ ধ্বনিমূল (Common Phoneme) বিদ্যমান। মানুষের এই কথার মৌলিক ধ্বনিমূলসমূহকে যদি অডিওগ্রামে (শ্রবনস্তর নির্নয়ে যে অডিওলজিক্যাল গ্রাফ ব্যবহার করা হয় যার X- অক্ষ বরাবর পিচ এবং Y-অক্ষে শব্দের তীব্রতাকে রেখে একজনের শুনতে পাবার সীমা নির্ধারণ করা হয়) পিচ এবং শব্দ তীব্রতার গ্রাফে স্থাপন করা হয় তবে একটি কলার (Banana) মতো এলাকা চিন্হিত হয়। অর্থাৎ এই কলার মতো গঠন এলাকায় যেসব ধ্বণিমূল আছে তা যদি কেউ  উচ্চারণ করতে পারেন এবং সাধারন কথোপকথন শব্দ তীব্রতায় যদি এগুলো শুনতে পান তবে তার জন্য ভাষা মুখে বলে যোগাযোগ করা সম্ভব। সুতরাং স্পিচ ব্যানানা বলতে আমরা মানুষের কথার মৌলিক ধ্বনিসমূহের গ্রাফিক্যাল প্রকাশ বলতে পারি। মানুষের শ্রাব্যতার সীমার মাঝে স্পিচ ব্যানানা ছাড়াও আরো শব্দ আছে যেমন গাছ থেকে পাতা পরা, টিপ টিপ করে বৃষ্টি পরা, ঘড়ির টিক টিক শব্দে চলার মতো ক্ষীণতীব্র শব্দ অথবা বজ্রপাত, রক মিউজিকের কনসার্ট কিংবা জেট বিমানের ছুটে চলার মতো উচ্চতীব্র শব্দও বিদ্যমান। কিন্তু স্পিচ ব্যানানা এমন একটি টুল যেটি আমাদের সাধারণ কথোপকথন এর সাথে সম্পর্কিত ধ্বনিসমূহকেই নির্দেশ করে। অডিওলজিস্টদের কাছে স্পিচ ব্যানানা একটি গুরুত্বপূর্ণ টুলস কারণ কারো এই এলাকার মাঝে বিদ্যমান ধ্বনিমূলসমূহ শুনতে সমস্যা হলে তার পক্ষে কোনো কথোপকথনে অংশগ্রহণ করা প্রায়শই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। আর যদি এই মৌলিক ধ্বনিসমূহ না শুনতে পেয়ে কোনো শিশু তার ভাষাবিকাশ বয়সে (১-৩/৫ বছর) ধ্বণিতাত্তিক সচেতনতা (Phonological awareness) অর্জন করতে ব্যর্থ হয় তবে তার ভাষাবিকাশও ব্যহত হবে। আর এ কারণেই আমাদের সবার বিশেষ করে শিশুদের এই স্পিচ ব্যানানার সবগুলো ধ্বনি উচ্চারণ ও শ্রবন ক্ষমতা কোনোভাবে ব্যাহত হয়েছে কি-না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে সচেতন থাকা উচিত।

তথ্যসূত্রঃ

  1. https://www.clearvaluehearing.com. [Online] https://www.clearvaluehearing.com/clearvalue-hearing-blog/2016/12/9/the-speech-banana-and-the-sounds-of-human-speech.
  2. https://en.wikipedia.org. [Online] https://en.wikipedia.org/wiki/Speech_banana.
  3. Berke, Jamie. [Online] https://www.verywellhealth.com/what-is-the-speech-banana-on-a-hearing-test-1048455.
  4. http://www.globaldownsyndrome.org. [Online] http://www.globaldownsyndrome.org/wp-content/uploads/2017/06/The-Speech-Banana-Handout.pdf.
  5. https://www.hearatlanta.com. [Online] https://www.hearatlanta.com/the-human-speech-banana-an-introduction/.
  6. https://ohns.ucsf.edu/audiology/. [Online] https://ohns.ucsf.edu/audiology/education/peds.
  7. www.americanhearingbalance.com. [Online] https://www.americanhearingbalance.com/hearing-loss-articles/what-exactly-do-audiograms-and-speech-bananas-mean-to-your-hearing/.

Leave a Comment

Skip to content