অর্থমোহ, টাকার ফানুস, ভবিষ্যৎ মরীচিকা সামাজিক শ্রেণী উন্নয়ন, ঠাঁট বজায় রেখে কেতাদুরস্ত চালচলন– এই কি জীবন? নিজেকে মানুষ বলে পরিচয় দিতে আমরা অভ্যস্ত। কিন্তু মনুষ্যত্বের মাপকাঠি কি? এ প্রশ্নের জবাব আজো অজানা। যদি ধরে নেই, মানুষ হবার নির্দেশক অর্থ-বিত্ত আর ডলার-পাউন্ড হলো সেটার সার্টিফিকেট, তবে পৃথিবীটাকে কি কেনাবেচার বাজার ছাড়া অন্য কিছু বলা যাবে?
শক্তি যদি মনুষ্যত্বের ভিত্তি হয় তবে পৃথিবীকে শক্তির মহড়া দেখানো রণক্ষেত্র বলতে আপত্তি থাকার কথা নয়। সর্বোপরি পৃথিবীটাকে যদি সুন্দর-মনোরোম বলতে চান, তবে এ কথা অস্বীকারের উপায় নেই যে আমাদের মনুষ্যত্ব এবং সামাজিকতার ভিত্তি হলো ভালোবাসা, সৌহার্দ্য।
সৃষ্টিজগতের মানুষ প্রজাতিটি কেন জানি সব কিছুতেই শ্রেনীবিন্যাস করতে আর কোন কিছুকে টেনে হিচড়ে বড় করতে পটু। যেখানে বাদ যায়নি ভালোবাসাও। ভালোবাসারও অনেক বিস্তারন (Elaboration), শ্রেণীকরণ সম্পন্ন হয়েছে এবং হচ্ছে। কালে কালে ভিন্ন ভিন্ন ভালোবাসার নজির স্থাপন করেছে মানুষ। যার একটার চেয়ে আরেকটাকে একটু কম বা বেশি বলা দুরূহ ব্যাপার হয়ে যায়।
বরাবরই ভালোবাসার এ উৎসবের মিছিল থেকে বাদ পড়ে গেছে সমাজের একটি অংশ, একটি জনগোষ্ঠী, একদল প্রায়-মানুষ। প্রায়-মানুষ বললাম কারন তারা এখনো মানুষের মর্যাদা লাভ করতে পারেনি। যারা সমাজের প্রচলিত পদ্ধতিতে যোগাযোগ করতে পারে না বা একটু কম পারে। তাদেরও যোগাযোগ ব্যবস্থা আছে যা আপনি কিংবা আমি বুঝতে পারি না। এ কর্পোরেট ভালোবাসার যুগে তাদেরকে ভালোবাসবার মানুষ হয়তো হবে না। অনেকে স্টক মার্কেটের দরপতন কিংবা বিসিএসের কাগুজে জ্ঞান নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। কিন্তু আপনার জন্য প্রস্তুত ভালোবাসার নক্ষত্রফুল যা তারা ফুটিয়েছে পরম যত্নে। ফুলেল সজ্জা আর সৌন্দর্যশোভনে ভালোবাসার আসন প্রস্তুত করেছে তারা।
ওহে সুশীল সমাজ!
আমন্ত্রণ আপনাদের যোগাযোগ বৈকল্যে আক্রান্ত মানুষের থেকে ভালোবাসা গ্রহনের। ভালোবাসা না পেয়ে তারা আজ অভিমানে আপনাদের জন্য বুক উজাড় করে ভালোবাসা বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত। নাইবা দিলেন ভালোবাসা, এবার ইচ্ছে মতো নিয়ে নিন যতটুকু ধারণ ক্ষমতা আছে। আমরা ভালোবাসতে চাই। ভালোবাসা নিন। প্লিজ ভালোবাসা নিন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ বৈকল্য (Communication Disorders) বিভাগের সম্মান শ্রেণীতে পাঠগ্রহন চলছে। প্রতিবন্ধকতা, সীমাবদ্ধতা, যোগাযোগ বৈকল্য বিষয়ক তাত্ত্বিক এবং প্রায়োগিক দিক নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করছি। উদ্ভাবনী গবেষণামূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সামাজিক পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ থেকে চিন্তাকে ভাষায় রূপ দেয়ার চেষ্টায় নিয়োজিত।